Songs and musical hub
Title: | Pakhira Eka Hoye Jay l পাখিরা একা হয়ে যায় |
---|---|
Singer: | Sayeeda Shampa |
Lyricist: | Golam Murshed |
Composition: | Neepo |
Music Arrangement: | Neepo |
Artwork: | Risad |
Label: | Gaan Janala |
“পাখিরা একা হয়ে যায়” গানটি নিয়ে গানটির গীতিকার গোলাম মোর্শেদ এর কিছু কথাঃ
গানটি সুর এবং সঙ্গীত করেছিলো নিপো।
এই গানটির বেশীরভাগ লিখা এবং সুর করার কাজটি হয়েছিলো একই দিনে। সেটা প্রায় ১৩/১৪ বছর আগের ঘটনা। শিল্পী ফাহমিদা নবী দ্বিতীয়বারের মতো ‘বেঙ্গল ফাউন্ডেশন’ থেকে তার ১২ টি গানের “ভুল করে ভালবেসেছি আমি এই তো” শিরোনামের একক অ্যালবামের কাজ মাত্র শুরু হয়েছে তখন।সব গুলো গান আমার লিখা। তারই প্রস্তুতি হিসেবে সে সময়েকোনো বিকেলে বেলার দিকে আমি এবং ফাহমিদা, বনানীতে নিপোর অফিসে চলে গিয়েছি কয়েকদিন। তিনজন একসাথে বসেছি, তৈরী হয়ে যাওয়া গান গুলোর মধ্য থেকে আ্যলবামের জন্য কোন বারোটা গান নির্বাচিত হবে, সেটা চূড়ান্ত করার জন্য।
কাজ চলছে, কিছু গান আলাদা করছি, কিছু গান সরিয়ে রাখছি। এর মধ্যে একদিন বিকেলে অনেকটা মাথায় ভূত চাপার মতো একটা নতুন গানের কয়েকটা নতুন লাইন মাথায় ভর করলো। না লিখে রাখলে, মনে থাকবে না এবং যে কাজ নিয়ে বসেছি, সেটাও ঠিক মতো করতে পারবো না। সে আশঙ্কায় তখনই লাইন গুলো লিখে রাখতে কাগজ কলম নিয়ে বসে পড়লাম। দেখতে পেলাম একটা গানের মুখ তৈরী হয়ে গেছে, ব্রীজলাইন সহ।
ব্রীজলাইনটি ছিলো : “ভালবাসার পাখিরা একা হয়ে যায়” ।
খুব ভাল লাগলো এবং মনে হোলো এভাবে এগিয়ে নেয়া যাবে গানটি সম্পূর্ণ করার জন্য। নিপো তখন আমার লিখা কথা গুলোতে চোখ বুলিয়ে গীটার হাতে নিয়ে একটা সুর দাঁড় করিয়ে ফেললো। বাহ্ শব্দটা বেরিয়ে আসলো আমার মুখ থেকে, সুরটি শুনে। পরের দিনই কাজের ফাঁকে মাথার ভূত পুরো সরানোর জন্য গানটির দুইটা অন্তরাও লিখে ফেললাম। ফাহমিদা নবী তো তখন সেখানেই ছিলো। সে তো আর চুপ করে থাকতে পারলো না। নিপো কে অনেকটা হুকুম দেয়ার মতো করে বললো, চলো, মুখটা গেয়ে দেখি কেমন লাগে। যেই কথা সেই কাজ। আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনছি ওদের দু’জনের প্র্যাকটিস।
কিছুক্ষণ পর আমরা ৩ জনই উপলব্ধি করলাম, আমরা আসল কাজ থেকে দুরে সরে যাচ্ছি। দেরী না করে নতুন গানটি বাক্সবন্দী করে মূল কাজে মন দিলাম।
তারপর বেশ ক’টি বছর পেরিয়ে গেলো। এরমধ্যে অনেক গান তৈরী হয়েছে আমার লিখা এবং নিপোর সুরে। কিন্তু সেই বাক্সবন্দী করা গানটির কথা একবারও কারো মনে আসে নি।
তারপর হঠাৎ একদিন ( সেটাও ১৩ বছর পর অর্থাৎ ২ বছর আগে কোনো এক সময়ে ) আমার পুরোনো গান- বাক্স খুলে পাতা উল্টাতে উল্টাতে আবিস্কার করলাম সেই গানটির লিরিক এবং সুর রেকর্ড করা ক্যাসেটটি একসাথে। অনেকটা সময় সেটা নিয়ে বসে রইলাম এবং বার বার শুনতে থাকলাম গানটি। মনে হোলো, এটি একটি ভাল ডুয়েট গান হতে পারে। কাকতালীয় ভাবে তখন আমি আসলেই একটা ডুয়েট গান তৈরীর চিন্তায় মগ্ন ছিলাম, যে গানটি গাইবে নিপো এবং আমেরিকা প্রবাসী সাঈদা শম্পা দু’জন মিলে। মনে আসলো, ডুয়েট গানটি এখন হাতেই আছে । সাথে আরো মনে হোলো, অন্তরার কথা কিছুটা বদল করলে এবং সেভাবে তার সুর নতুন করে সাজাতে পারলে, খুব ভাল একটা কাজ হয়ে যাবে। নিপোর হাতে তুলে দিলাম নতুন করে লিখা অন্তরা দু’টি। ৩ দিনের মধ্যে নিপো কাজটি শেষ করলো। মনে হোলো, মেঘ চাইতেই, মন ভাসিয়ে দেয়া বৃষ্টিপাত ! ভীষণ ভাল লেগে গেলো নতুন করে সাজানো গানটি। নাম দিলাম তার :
“পাখিরা একা হয়ে যায়” ।
গানটি তৈরীর পেছনের গল্প টা ছিলো ঐটুকু। তারপর নিয়মমাফিক কাজ। শম্পা এলো সুদুর আমেরিকা থেকে পরিকল্পনা অনুযায়ী। নিপো গানটির কম্পোজিশন শেষ করে শম্পার সাথে প্র্যাকটিসে বসলো। তারপর গানটি রেকর্ডিং হয়ে গেলো।তবে শেষমেশ গানটি duet, male এবং female এই তিন ভার্সনেই রেকর্ড করা হোলো।
গানটি নিয়ে এটা বলা যেতে পারে, শ্রোতারা একটি নতুন স্বাদের গান পেতে যাচ্ছেন এর কথা এবং সুরের বিচারে ।
নিপো এবং শম্পা দু’জনেই ভাল গেয়েছে ।অন্য ভাবে বলতে গেলে, ভিন্ন স্বাদের এই গানটির প্রতি শিল্পী দু’জন সুবিচার করতে কার্পণ্য করেনি, তাদের কন্ঠ এবং গায়কী দিয়ে। আমার এই মন্তব্যে প্রিয় শ্রোতারা সানুগ্রহে সায় দিবেন , আশা রাখছি।
শ্রোতাদের জন্য রইলো অফুরন্ত ভালবাসা।