Songs and musical hub
Title: | Rupakothari Golpo l রূপকথারই গল্প |
---|---|
Singer: | Sayeeda Shampa & Ayon Chaklader |
Lyricist: | Golam Murshed |
Composition: | Sajib Das |
Music Arrangement: | Sajib Das |
Cinematographer: | Anand Sarker |
Video Edit & Color: | Ashik Rahman |
Artwork: | Risad |
Label: | Gaan Janala |
“রূপকথারই গল্প” শিরোনামের গানটি নিয়ে এই গানের গীতিকার গোলাম মোর্শেদ এর কিছু কথাঃ
এই দ্বৈত গানটি দ্বৈত কন্ঠে গেয়েছে শিল্পী সাঈদা শম্পা এবং অয়ন চাকলাদার ।
সুর এবং সঙ্গীতায়োজন করেছে সজীব দাস।
গানটির পেছনের গল্প খুব মজার । মাত্র দেড় মাস আগের কথা। সাঈদা শম্পা তখন সারা বছরের ছুটি গুছিয়ে একসাত করে আমেরিকা থেকে ঢাকায় এসেছে। সাথে নিয়ে এসেছে কাজের লম্বা তালিকা। কয়টা গানের রেকর্ডিং হবে এবং কয়টার শুটিং হবে, তার আঁটসাঁট হিসেব। একমাস ছুটির মধ্যে সাংসারিক এবং সামাজিক কাজ কর্ম আর গান বিষয়ক ব্যস্ততা। কোনদিন কারণে অকারণে অন্যথা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সেভাবেই চূড়ান্ত হয়েছে শম্পার গানের তালিকা ।
পরিকল্পনা অনুযায়ী অন্যান্য সুরকারের গান ছাড়া একা সজীব দাসেরই তিনটা গানে voice দিয়ে ফেললো শম্পা ।এরপর আর রেকর্ডিং এর কাজ নেই। এরকম অবস্থায় একদিন সন্ধ্যা বেলায় সজীবের একটা ফোন পেলাম। বললো, বুবু কে দিয়ে (সজীবের সাথে শম্পার ভীষণ আন্তরিক সম্পর্ক এবং শম্পাকে সজীব ‘বুবু’ বলে ডাকে) আরেক টা গান করাতে চাই।
আপনি ‘রূপকথা’ নিয়ে একটা গান লিখে পাঠান আমাকে। আমি কিছু অবাক হয়েছি ভাল লাগার মিশ্রণে ।
সাথে সাথে বললাম, সজীব তুমি ‘মুখ’ এর প্রথম দুই লাইন কিছু একটা সুর করে পাঠাও আমাকে। দেখি কি করা যায়।
চটজলদি নগদ কাজ । এক মিনিট পরই দু’লাইন সুর করে পাঠিয়ে দিলো সজীব । আমিও সাথে সাথে সুরের উপরে লিখে পাঠালামঃ
“রূপকথারই গল্প বুঝি তুমি,
বাস্তবে যে যায় না যাকে পাওয়া”।
ফোনের অন্য প্রান্ত থেকে সজীব যেন খুশীতে লাফ দিয়ে উঠলো। তারপর, দু’দিনের মধ্যেই লিখা , সুর এবং মিউজিক করা শেষ।
কিন্তু ঝামেলা বাধলো অন্য জায়গায়। সেটা শিল্পীকে নিয়ে অর্থাৎ শম্পাকে নিয়ে। শম্পা গানটি না শুনেই বলে দিলো, এতোগুলো কাজ শেষ করে সে এই পরিমান ক্লান্ত যে, আরেকটা নতুন গান করার শক্তি তার নেই।
ব্যাপারটা বুঝে একটা দিন চুপ করে থাকলাম। পরের দিন গান টা শম্পাকে পাঠিয়ে দিয়ে জানালাম : ‘গানটা তোর এবার গাইতে হবে না। শুধু শুনে রাখ’। আমার আন্দাজ এ ব্যাপারে ভুল হয়নি। গানটি শোনার পর শম্পা নিজে আমাকে ফোন করে জানালো, যতো কষ্টই হোক না কেন, এই গান টা এ যাত্রায় রেকর্ডিং এবং শুটিং শেষ করেই সে আমেরিকায় ফিরবে !
কাজ হয়ে গেলো।
এখানে উল্লেখ্য যে, এবারই প্রথম আমার লিখা গানে তরুন কন্ঠশিল্পী ‘অয়ন চাকলাদার’ কন্ঠ দিলো। এর মধ্যে এর দুইটা গান হয়ে গেছে। দু’টোই শম্পার সাথে দ্বৈত কন্ঠের গান।
এই শেষ বেলায়, ‘রূপকথাই গল্প’ গানটির ব্যাপারে শম্পা এবং সজীব মিলে অয়নের কথাই ভাবলো (অয়নের কথা নিয়ে এখানে আলাদা করে পরে আসছি)।
গান রেকর্ডিং এবং শুটিং উল্কা গতিতে শেষ হোলো।
এক কথায়,অপূর্ব একটি রোমান্টিক দ্বৈত গান হয়ে গেলো। দ্বৈত গান হিসেবে এটি একটি অন্য উচ্চতায় জায়গা করে নিবে শ্রোতাদের মনে, সেটা বলা কতোখানি মানানসই সেটা বিচার না করেই কথাটা বলে রাখলাম। শম্পা তার জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ডেলিভারি দিয়েছে গানটিতে। অয়নও একদম সমান সমান। এরকম মধুর রোমান্টিক গান আগে কখনো লিখেছি কিনা মূহুর্তে মনে পড়ছে না।
আর এটাও সত্য যে, সজীব দারুন মিষ্টি সুর গানটিকে আলাদা রকমের ভাল লাগার জায়গায় নিয়ে গেছে।
এবার অয়ন চাকলাদারের কথা বলি। এবারই ওর কথা জেনেছি এবং পরিচয় হয়েছে, সজীবের মাধ্যমে। এটা আমার নিরেট ব্যর্থতা যে, এতদিন ধরে গান লিখছি, কিন্তু সে বিস্তারে আমার অনেকের সাথে জানা-শোনা হয়ে ওঠেনি । যেটা দরকার ছিলো। অয়নের সাথে পরিচয় হওয়ার পর সেটা বেশ করে উপলব্ধি করেছি। অয়নকে এই অল্প সময়ে কাজের মধ্যে যতটুকু পেয়েছি, ওর সম্পর্কে এতটুকু বলতে পারিঃ
অয়ন একটি অসম্ভব সুন্দর পুরুষ কন্ঠের মালিক। যা তাকে অনেক অনেক দুর নিয়ে যাবে। সাথে ওর উল্লেখ করার মতো একটা গুন আছে , সেটা হলো , ও একজন ভীষণ মার্জিত এবং পরিশীলিত মনের মানুষ। সব শিল্পীদের ভেতর এটা থাকা ভীষণ দরকার। ওর আচরনে একবারের জন্যেও মনে হয়নি, ওর সাথে মাত্র পরিচয় হয়েছে। যে ৪ টা গানে ও কন্ঠ দিয়েছে, প্রতিটা গানেই আমার মন ভরে গিয়েছে। । শিল্পী শম্পারও ঠিক একই রকম ধারনা হয়েছে , অয়ন সম্পর্কে।আমি জানি অয়নের সাথে আমার আরো আরো কাজ হবে।
শেষে , একথাই ফিরে আবার বলছি , ‘রূপকথারই গল্প’ সবার জন্য ভাল লাগার মতো একটি গান, যা হয়তো থেকে যাবে মানুষের মনে।
আর এই কারণে প্রিয় সজীব দাস ‘সবচেয়ে বড়ো ধন্যবাদের পাওনাদার’।
সজীব উসকে না দিলে, এমন একটি গান, আমার কখনোই লিখা হোতো না।
শ্রোতাদের জন্য রইলো অফুরন্ত ভালবাসা ।
রূপকথারই গল্প বুঝি তুমি
বাস্তবে যে যায় না তোমায় পাওয়া
সেই কথাটা নাইবা মনে রাখি
রূপকথাতে তোমার পাশে থাকি।
সত্য প্রেমের মানুষ তুমি দামী
রূপকথাও চিনে না তার বাড়ি
চাও যদি আজ মনটা দিতে পারি
ইচ্ছে করে হাতটা তোমার ধরি।
এইতো আমার রাজকুমারী পরী
সঙ্গী যে তার রাজকুমার আমি
আকাশ নীলে দু’জন মিলে উড়ি
না না কিছু আর তো
নেই চাওয়ার নেই
তুমি ছাড়া কিছু তো আর
চাওয়ার নেই।
রাজকুমারী আছি তোমার সাথে
স্বপ্ন দুয়ার খোলার চাবি হাতে
আমি তো আজ খুলেছি দুয়ার
স্বপ্ন মিথ্যে নয় সত্যি আমার ।
অচিনপুরের রূপকথাকে ভুলে
সাতকাহনের সুখে রেখো তুমি
এই যে আমার পৃথিবী জুড়ে
সব যে তুমিময় সব যে তুমি।
তুমি ছাড়া কিছু তো আর
চাওয়ার নেই।
এই পৃথিবীর তেপান্তরের মাঠে
চলছে জীবন ঘড়ির কাঁটার সাথে
সে জীবন আজ লাগে মিছে
স্বর্গ খুঁজি তাই তোমার কাছে ।
তুমি আমার মন আকাশের ঘুড়ি
নিঝুম জলের সাদা পাথর নুড়ি
সে কথা আজ রেখো মনে
সুখের বাঁধি ঘর তোমার জন্যে।
তুমি ছাড়া কিছু তো আর
চাওয়ার নেই ।