Story Behind The Song
“একটা একুশ লাগে” গানটির গীতিকবি গোলাম মোর্শেদ এর , গানটি নিয়ে কিছু কথাঃ
নিজের ভাষায় কথা বলবো, নিজ মাটিতে বুক টান করে দাঁড়িয়ে স্বাধীন ভাবে চলবো….সেই বাসনার আগুন , বুকের ভেতর জমতে জমতে একদিন আগ্নেয়গিরির চেহারা নিলো। সেই আগুন- পাহাড়ের অগ্ন্যুৎপাতের প্রথম ফুলকি ওঠার দিন ১৯৫২ এর ২১শে ফেব্রুয়ারি। তারপর সে আগুনের অবিরাম ফুলকি একদিন আমাদের উপহার দিলো “বাংলাদেশ” নামের নিজের একটা জমিন।
পৃথিবীর তাবৎ মানুষ সেই রূপকথার ইতিহাসকে স্যালুট দিলো । একুশ এখন কেবল প্রিয়জনের রক্তে রাঙ্গানো , ব্যথা মোড়ানো দিন নয়। একুশ এখন সব মানুষের প্রেরণার আলো জ্বলা হারিকেন।
মানুষ শিখে নিলো, জীবনের সব ন্যায্য
চাওয়ার চিৎকারের জন্য, সব ন্যায্য পাওনা-সুখ ছিনতাইয়ের জন্য “একটা একুশ লাগে” । আর সে নিয়েই আমার লিখা এই গান।
মাত্র ২০ দিন আগের কথা। এই দ্বৈত কন্ঠের গানটির শিল্পী শম্পা সুদুর আমেরিকা থেকে এবং এর সুরকার অন্তু ঢাকা থেকে , দু’জনে প্রায় একই সময়ে আমাকে জানালো, ২১ শে ফেব্রুয়ারি নিয়ে একটা দ্বৈত কন্ঠের গান তৈরী করা গেলে ভাল হয়।
রাজি হয়ে গেলাম। ২ দিন পরেই তিন অক্ষরের একটা লাইন ‘একটা একুশ লাগে’ মাথায় ঝামেলা দেয়া শুরু করলো। দু’দিনের মধ্যেই নিজেকে ঝামেলা মুক্ত করলাম, গানটি লিখা শেষ করে। লিখাটি তখ্খনি অন্তুকে চালান করে দিলাম। বললাম ওকে, ভাল সুর হতে হবে কিন্তু।
৪ দিনের মাথায় সুর হয়ে গেলো। প্রত্যাশাকে ভাসিয়ে দিয়ে সুর করেছে অন্তু। গানটি শুনে মাথা ঘুরছে ,পুরুষ কন্ঠ কাকে নেয়া যেতে পারে ভাবনায়। গানটি ভাল গাইবে, এমন অনেক ভাল শিল্পীই আছেন কাছে-দুরের। কিন্তু একজনের নাম ছাড়া আর কারো কথা মনে আসছিলো না তখন। কি বিপদ…!
উনি হচ্ছেন ওপার বাংলার বিশাল গানের মানুষ, একজন আপাদমস্তক বাঙালী “নচিকেতা চক্রবর্তী“। দুই বাংলায় ওনার তুমুল জনপ্রিয়তার কথা কারো অজানা নয়। তবে ওনার সাথে আমার ব্যক্তিগত যোগাযোগ ছিলো না বিধায় অন্তুকে ডেকে পুরো ব্যাপারটা জানালাম। আমার ইচ্ছের কথা শুনে অন্তু এক কথায় সায় দিলো এবং বললো, সব ব্যবস্থা ও করে নিবে।
তারপরের কথা এরকমঃ নচিকেতা গানটা আনন্দের সাথে গাইলেন এবং একই দিনে ভিডিও করে পাঠিয়ে দিলেন।
বলতে পারি এখন, “একটা একুশ লাগে” গানের জন্য “একজন নচিকেতার” কন্ঠই লাগে ভীষণ ভাবে।
সাথে সহযোদ্ধা “শম্পা” তেমন করেই গলা ঢেলেছেন গানটিতে।
প্রত্যাশা রাখছি, “একটা একুশ লাগে” গানটি , আগামীর দিনগুলোতে জাগরণের হাতিয়ার হিসেবে পৃথিবীর সব মানুষের ভেতর শক্তির যোগান দিক।
Lyric
আজ কিছু নেই, কাল যে হবে সব
ভাবনা উড়াল, ভয়হীন রঙ্গীন ।
জীবন বাজীতে থামিয়ে দিলো যারা
মৃত্যু সুখে, গাইলো তারা গান
এই মাটি জল, এই দেশ আমার ।